১) লোকনাট্যের চারটি বৈশিষ্ট্য লিখুন।
উত্তর- লোকনাট্যের চারটি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ-
i) এই নাটক সাধারণত একটি সুনির্দিষ্ট অঞ্চলে বসবাসকারী কোন নির্দিষ্ট মানবগোষ্ঠীর অভিনয়ভিত্তিক নাটক।
ii) এই ধরনের জনবিনোদনমূলক নাটকে ঐতিহাসিক ঘটনাবলী স্থান পায়।
iii) লোকনাট্যতে বিশেষ সম্প্রদায়, চিন্তাভাবনা, সংস্কার, বিশ্বাস, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের রীতিনীতি প্রকাশ পায়।
iv) কৃষির উৎপাদন ও উর্বরতা শক্তির বৃদ্ধি কল্পে গ্রামের লোক সমাজের কৃষি দেবতার সন্তুষ্টি বিধানের জন্য মুখে মুখে রচিত এই নাটক যা নাট্য লক্ষণাক্রান্ত হয়ে নৃত্য ও সংগীতের মাধ্যমে অভিনীত হয়।
২) লোকগান কি?
উত্তর- নগরের রূঢ় বাস্তব এবং যান্ত্রিক সভ্যতার বহুদূরে প্রকৃতির অকৃপণ শ্যামলিমার মধ্যে বেড়ে ওঠা সহজ, সরল, অনাড়ম্বর মানুষগুলির ভেতর থেকে যে স্বতঃস্ফূর্ত বিরহ, আনন্দ, সুখ ও দুঃখের সংগীত নিঃসৃত হয়েছে সেটাই আমাদের কাছে লোকগান নামে পরিচিত। এই লোকগান দেশ, কাল ও পাত্রভেদে আমাদের কাছে ভিন্ন ভিন্ন রূপে ধরা দিয়েছে।
৩) লয় কী? এর প্রকার গুলি উল্লেখ করুন।
উত্তর- সঙ্গীতের ছন্দকে সমান গতি এবং সমতা রক্ষা করার নাম হল লয়। লয় প্রধানত তিন প্রকার- বিলম্বিত লয়, মধ্য লয় এবং দ্রুত লয়।
৪) জলরঙের দুটি সুবিধা লিখুন।
উত্তর- জলরঙের সুবিধা গুলি হল-
i) ছবির মধ্যে স্বতন্ত্র নান্দনিক আবেদন জলরঙের মাধ্যমে তৈরি করা যায়, যা অন্য কোন মাধ্যমে সম্ভব নয়।
ii) সহজ-সরল ব্যবহারিক পদ্ধতির জন্য সকলে সহজেই এটি ব্যবহার করতে পারে। শিল্পী থেকে শিশু সকলের কাছেই এটি খুবই জনপ্রিয়।
৫) কবিতা কি?
উত্তর- কবিতা হল একটি বিশিষ্ট শিল্পমাধ্যম বা সাহিত্যমাধ্যম যা রূপ, রস ও ভাষার বিশেষ ব্যবহারের মাধ্যমে কবির হৃদয়াবেগ পাঠকের কাছে পৌঁছে দেয়।
৬) চারুশিল্প ও কারুশিল্পের দুটি পার্থক্য লিখুন।
উত্তর- যে কলা বা কারুকাজ বাহ্যিক কাজে লাগে না, কিন্তু যাতে মনের তৃপ্তি পাওয়া যায়, তাকে চারুকলা বলে। অন্যদিকে যে কলা বা শিল্প প্রধানত দৈহিক ও ব্যবহারিক চাহিদা মেটানোর সঙ্গে আনন্দ দান করে, তাকে কারুকলা বা কারুশিল্প বলা হয়।
চারুশিল্প হল আঁকিয়ে, এই যেমন ধরুন, বইয়ের প্রচ্ছদ আঁকা, দেওয়াল লিখন, দেওয়াল চিত্র, পোট্রেট, স্কেচ তৈরী ইত্যাদি। আর হাত পাখা বানানো, ঝুড়ি বানানো, হাত দিয়ে বেতের চেয়ার বানানো এগুলো হল কারুশিল্প।
৭) 'অরিগমি'র অর্থ লিখুন।
উত্তর- একখণ্ড কাগজকে না কেটে, কোনরূপ আঠা ব্যবহার না করে, কেবল ভাঁজ করে জীবজন্তু, পাখি ইত্যাদি রূপ দেওয়ার একটি কৌশল ও খেলা হল অরিগমি। অরিগমি শব্দটির উৎপত্তি জাপানি শব্দ Ori (ভাঁজ করা) এবং Kami (কাগজ) থেকে।
৮) সৃজনশীল কাজের দুটি নীতি উল্লেখ করুন।
উত্তর- সৃজনশীল কাজের দুটি নীতি হল— (i) সৃজনশীলতা : এখানে সাবলীলতা হল চিন্তন প্রক্রিয়ার দ্রুততা। দ্রুত চিন্তা করার ক্ষমতা অথবা সাবলীলতা সৃজনশীল কাজের একটি বৈশিষ্ট্য। (ii) নমনীয়তা : নমনীয়তা বলতে বোঝানো হয় গতানুগতিক সংস্কৃতি, পূর্বে গৃহীত ধারণা প্রভৃতিকে সহজেই ত্যাগ করার ক্ষমতা। সৃজনশীল কাজের জন্য এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
৯) সুকুমার শিল্পকলা ও লোক শিল্পকলার দুটি পার্থক্য লিখুন।
উত্তর- সুকুমার শিল্পকলা ও লোক শিল্পকলার পার্থক্য-
i) সুকুমার শিল্পকলা (Fine Arts)-র উৎপত্তি সুকুমারবৃত্তির স্বতঃস্ফূর্ত রোমন্থন ও সৃজনশীল সৃষ্টির অদম্য স্পৃহায়। অন্যদিকে, কোন অঞ্চলের বিশেষ জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস, মূল্যবোধ, সংস্কার, শিল্প-সংস্কৃতিমনস্কতার ভিত্তিতেই লোকশিল্পের উৎপত্তি।
ii) সুকুমার শিল্পকলায় পরিকল্পিত মানসিকতার পূর্ণ প্রতিফলন বিদ্যমান। অন্যদিকে, লোক শিল্পকলায় পরিকল্পিত মানসিকতার পরিবর্তে বংশানুক্রমিক প্রবাহমানতা লক্ষ্য করা যায়।
১০) রামনিধি গুপ্ত বাংলা সংগীতের ইতিহাসে একটি বিখ্যাত নাম- কেন?
উত্তর- রামনিধি গুপ্ত (১৭৪১—৬ এপ্রিল ১৮৩৪) সাধারণত নিধু বাবু নামে পরিচিত, বাংলা টপ্পা সঙ্গীতের একজন মহান সংস্কারক। তার পূর্ব পর্যন্ত টপ্পা এক ধরনের অরুচিকর গান হিসেবে বিবেচিত হত। তার গানের ভক্তরা অধিকাংশই সেকালের ধনাঢ্য সম্ভ্রান্ত ছিলেন। পরবর্তীকালে, ভগিনী নিবেদিতা তার লেখা গানের প্রভূত প্রশংসা করেছিলেন।এদেশে তিনিই প্রথম ইংরেজি অভিজ্ঞ কবিয়াল এবং প্রথম স্বাদেশিক সঙ্গীতের রচয়িতা। তার গানের ছত্র - "নানান দেশের নানান ভাষা/ বিনে স্বদেশী ভাষা মিটে কি আশা" - বাংলায় প্রবাদের মর্যাদা পেয়েছে।
১১) মধুবনী কলার দুটি বৈশিষ্ট্য লিখুন।
উত্তর- মধুবনী কলার দুটি বৈশিষ্ট্য হল-
i) মধুবনী চিত্রকলা একটি গ্রামীণ এবং প্রাচীন লোকশিল্প।
ii) এই চিত্র অঙ্কন করার জন্য প্রথমে মাটির দেওয়ালকে গোবর দিয়ে ভালো করে লেভেলিং করা হয়। তারপর রঙের উপকরণ হিসেবে নীল গাছ থেকে নীল রং, চালের গুঁড়ো থেকে সাদা রং, ভুসোকালি থেকে কালো রং, শিম পাতা থেকে সবুজ রং এবং হলুদ থেকে হলুদ রং সংগ্রহ করে ব্যবহার হয়।
১২) ছৌ নাচের পরিচয় নির্ণায়ক দুটি বৈশিষ্ট্য লিখুন।
উত্তর- ছৌ নাচের বৈশিষ্ট্য-
i) এটি বাংলার লোকসাহিত্যের আঙিনায় দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত তথা পুরুলিয়ার আদিম, প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মুখোশ নৃত্য।
ii) ভারতীয় দেব-দেবী, নর-বানর, দৈত্য-রাক্ষস ইত্যাদি চরিত্রগুলির অনুরূপ মুখোশ তৈরি করে, তার দ্বারা সজ্জিত হয়ে এই নাচ করা হয়।
0 Comments